সহজ উপায়ে কিভাবে আমরা স্বাস্থ্য সচেতন হতে পারি
স্বাস্থ্য সচেতন হওয়ার জন্য কিছু উপায় হল-পরিমিত ও স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করা, নিয়মিত ব্যায়াম করা, পর্যাপ্ত ঘুম এবং মানসিক চাপ কমানো। এছাড়াও, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা এবং স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গুলো অনুশীলন করা জরুরী। খাদ্যাভাসে স্বাস্থ্য সচেতনতায় থাকবে ক্ষতিকর খাদ্য ও পানীয় ব্যবহার না করা।
সুস্থ শরীর ও মনের জন্য নিয়মিত শারীরিক ক্রিয়াকলাপ প্রয়োজন। স্বাস্থ্য সচেতন
হওয়ার অর্থ হলো নিজের দৈনন্দিন জীবনের সাথে জড়িত চলাফেরার প্রয়োজনীয় যত্ন
নেওয়া। চ্যালেঞ্জিং ওয়ার্ক আউট হোক বা সাধারণ হাঁটা, ফিট থাকা
দীর্ঘস্থায়ী রোগের সম্ভাবনা হ্রাস করে, মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করে এবং
শক্তি বৃদ্ধি করে।
পেজ সূচিপত্রঃ স্বাস্থ্য সচেতন হওয়ার সহজ উপায় গুলো আমরা জানব
- সহজ উপায়ে কিভাবে আমরা স্বাস্থ্য সচেতন হতে পারি
- পরিমিত ও স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করুন
- নিয়মিত ব্যায়াম ও পর্যাপ্ত ঘুম প্রয়োজন
- মানসিক চাপ কমানো এবং স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তোলা
- পরিবেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে
- নিয়মিত চেকআপ করুন, যেমন যেগুলো রুটিন চেকআপ
- ধূমপান ও তামাক থেকে বিরত থাকুন
- রুটিন অনুযায়ী টিকা এবং ভ্যাকসিন গ্রহণ করুন
- নিজের জন্য সময় বের করুন এবং নিজের পছন্দের কাজ করুন
- লেখকের শেষ কথা, মন্তব্য-সহজ উপায়ে কিভাবে আমরা স্বাস্থ্য সচেতন হতে পারি
সহজ উপায়ে কিভাবে আমরা স্বাস্থ্য সচেতন হতে পারি
স্বাস্থ্য সচেতন হওয়ার জন্য কিছু সহজ উপায় হলোঃ সুষম খাদ্য
গ্রহণ, পর্যাপ্ত ঘুম, নিয়মিত শরীর চর্চা , মানসিক চাপ কমানো এবং
স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। এছাড়াও রোগের প্রাথমিক লক্ষণ দেখা গেলে দ্রুত ডাক্তারের
পরামর্শ নেওয়া উচিত। কিছু বিস্তারিত উপায় আলোচনা করা হলোঃ
সুষম খাদ্য গ্রহণঃ
- ফল, শাকসবজি, এবং গোটা শস্য বেশি করে খান
- প্রক্রিয়াজ আর খাবার, ফাস্টফুড এবং তিনি যুক্ত খাবার কম খান
- পরিমিত পরিমানে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট এবং ফ্যাট গ্রহণ করুন
পর্যাপ্ত ঘুমঃ
- প্রতিদিন ৭-৮ ঘন্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন
- ঘুমের একটি নিয়মিত রুটিন তৈরি করুন
- ঘুমের আগে ক্যাফাইন বা অ্যালকোহল পরিহার করুন
নিয়মিত শরীর চর্চাঃ
- সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট মাঝারি ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন
- হাটা, দৌড়ানো, সাঁতার বা আপনার পছন্দ সেই যে কোন খেলাধুলা করতে পারেন
- শারীরিক কার্যকলাপের জন্য একটি রুটিন তৈরি করুন
মানসিক চাপ কমানোঃ
- ধ্যান, যোগব্যায়াম বা গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করুন
- নিজের জন্য সময় বের করুন এবং এমন কাজ করুন যা আপনাকে আনন্দ দেয়
- পরিবারের সদস্য বা বন্ধুদের সাথে সময় কাটান
স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাঃ
- নিয়মিত হাত ধোয়া, বিশেষ করে খাবার আগে এবং টয়লেট ব্যবহারের পর
- পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন
- নিজে এবং চারপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন
অন্যান্য বিষয়ঃ
নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান, ধূমপান এবং মধ্যপান পরিহার করুন, ডাক্তারের
পরামর্শ ছাড়া কোন ওষুধ খাবেন না, নিজের শরীর এবং স্বাস্থ্যের প্রতি মনোযোগ দিন।
এই ছোট ছোট পদক্ষেপ গুলো আপনাকে স্বাস্থ্য সচেতন হতে এবং একটি সুস্থ জীবন যাপন
করতে সাহায্য করবে।
পরিমিত ও স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করুন
উপর খাদ্য কেমন দেখায় তা ব্যক্তি পেতে আলাদা হতে পারে, এটি আপনার সংস্কৃতি আপনি কোথায় থাকেন এবং স্থানীয়ভাবে কোন খাবার পাওয়া যায় তার ওপর নির্ভর করে। তবুও, নীতিগুলি একই রকম। লবণ, ফ্রি সুগার সেচুরেটেড ফ্যাট এবং ট্রান্স ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ খাবার কমানো। বেশি বেশি পান করুন। প্রতিদিন কমপক্ষে পাঁচ ধরনের ফল এবং সবজি খান। আপনার দৈনিক খাবার পরিকল্পনা করার সময় ফল,সবজি,শস্য বাদাম মনে রাখুন।
স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করা মানে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান
পরিমান মত গ্রহণ করা। যা শরীরের সুস্থতা ও প্রতিরোধে সাহায্য করে। স্বাস্থ্যকর
খাবার শরীরের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে, রূপ প্রতিরোধ করে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে
রাখতে সাহায্য করে। স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করার কয়েকটি উপায় নিচে দেওয়া
হলঃ
- সুষম খাদ্য গ্রহণঃ খাদ্য তালিকায় শর্করা, আমিষ , ভিটামিন, খনিজ লবণ ও ফ্যাট-এই উপাদানগুলো সঠিক পরিমাণে থাকা উচিত।
- পরিমিত খাদ্য গ্রহণঃঅতিরিক্ত বা কম নয়,শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী খাবার গ্রহণ করা উচিত।
- ফল ও সবজি বেশী খাওয়াঃ প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ফল ও সবজি বেশি পরিমাণে রাখা উচিত। এতে প্রয়োজনে ভিটামিন পাওয়া যায়
- ফাস্টফুড ও চিনিযুক্ত খাবার পরিহার করাঃ প্রতিনিধি যুক্ত খাবার শরীরের জন্য ক্ষতিকর, তাই এগুলো এড়িয়ে চলা উচিত।
- পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করাঃ শরীরকে সতেজে রাখতে এবং হজমের সাহায্য করতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা জরুরী।
- নিয়মিত ব্যায়াম করাঃ স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণের পাশাপাশি নিয়মিত ব্যায়াম করাও জরুরী। পরিমিত ও স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করে সুস্থ জীবন যাপন করা সম্ভব।
নিয়মিত ব্যায়াম ও পর্যাপ্ত ঘুম প্রয়োজন
নিয়মিত ব্যাচ এবং পর্যাপ্ত ঘুম আমাদের শরীরের জন্য খুবই দরকারী। ব্যায়াম
শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের অনুরোধ করে এবং পর্যাপ্ত ঘুম শরীরকে পুনরায় সতেজ
করে তোলে।
নিয়মিত ব্যায়ামঃ
শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি-ব্যায়াম করলে শরীরের ফিন নামক হরমোন নিঃসরণ
হয়, যা মনকে প্রফুল্ল রাখা এবং মানুষের চাপ কমাতে সাহায্য করে
ঘুমের উন্নতি-যারা নিয়মিত ব্যায়াম করেন, তাদের ঘুম ভালো হয়। ব্যায়াম শরীরে
ঘুমের চাহিদা বাড়ায়।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ ব্যায়াম-রুপ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং হৃদরোগ, ডায়াবেটিসহ বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি কমায়।
- ওজন নিয়ন্ত্রণঃ ব্যায়াম শরীরের অতিরিক্ত চর্বি কমাতে সাহায্য করে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে।
- পর্যাপ্ত ঘুমঃ
- শারীরিক ও মানসিক বিশ্রাম-পর্যাপ্ত ঘুম শরীরকে পুনরায় সতেজ করে তুলে এবং শারীরিক ও মানসিক ক্লান্তি দূর করে।
- স্মৃতিশক্তি ও মনোযোগ বৃদ্ধি-ঘুমের সময় মস্তিষ্ক নতুন স্মৃতি তৈরি করে এবং মনোযোগ ও স্মৃতিশক্তি বাড়ায়।
- রূপ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি-পর্যাপ্ত ঘুম প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং শরীরকে রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।
- হরমোন নিয়ন্ত্রণ-ঘুমের অভাবে শরীরের হরমোন গুলির ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে, তাই পর্যাপ্ত ঘুম হরমোন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
করণীয়ঃ
নিয়মিত ব্যায়াম করুন-প্রতিদিন অন্তত 30 মিনিটের জন্য ব্যায়াম করা উচিত
পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন-প্রতিদিন ৭-৯ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন।
ব্যায়াম ও ঘুমের মধ্যে সময়ের ব্যবধান রাখুন-ঘুমানোর খুব কাছাকাছি সময়ে ভারী
ব্যায়াম করা উচিত নয়।
মানসিক চাপ কমানো এবং স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তোলা
মানুষ অমানুষ এবং স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তোলার জন্য কিছু কার্যকরী উপায় নিচে
দেওয়া হলঃ
নিয়মিত ব্যায়াম
- পর্যাপ্ত ঘুম
- স্বাস্থ্যকর খাবার
- শিথিলকরণ কৌশল
- সময় ব্যবস্থাপনা
- সামাজিক সম্পর্ক বজায় রাখা
- শখের প্রতি মনোযোগ দেওয়া
- নেশা জাতীয় দ্রব্য পরিহার করা
- পেশাদারের সহায়তা
- কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা
প্রতিদিন কিছু সময় ব্যায়াম করা মানসিক চাপ কমাতে সহায়ক। যোগ ব্যায়াম, দৌড়ানো
, সাঁতার বা যে কোন শারীরিক কার্যকলাপ মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়। একটি
স্বাস্থ্য বিষয়ক ওয়েবসাইট অনুযায়ী শারীরিক কার্যকলাপের ফলে শরীরে এন্ডরফিন
নিঃসরণ হয়, যা মানসিক চাপ কমাতে এবং মনকে প্রফুল্ল রাখতে সাহায্য করে। প্রতিদিন
৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুম স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য । ঘুমের অভাবে মানসিক চাপ
বাড়িয়ে দিতে পারে। ফল, সবজি , গোটা শস্য , বাদাম এবং বীর সমৃদ্ধ খাবার
গ্রহণ করা উচিত। ফাস্ট ফুড চিনি যুক্ত খাবার এড়িয়ে যাওয়া ভালো।
গভীর শ্বাস প্রশ্বাস, ধ্যা্ন, যোগব্যায়া্ম, মানসিক চাপ কমাতে সহায়ক। কাজের
চাপ কমাতে সময় ব্যবস্থাপনার কৌশল অবলম্বন করা উচিত। সময় মত কাজ শেষ করার জন্য
একটি তালিকা তৈরি করা এবং সে অনুযায়ী কাজ করা ভালো । বন্ধু এবং পরিবারের
সাথে সাহায্য করে। সমর্থন মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ । এমন কিছু
করুন যা আপনাকে আনন্দ দেয়। গান শোনা, বই পড়া , সিনেমা দেখা বা বাগান করার
মত শখের প্রতি মনোযোগ দিলে মানসিক চাপ কমে। অতিরিক্ত অ্যালকোহল , ধূমপান বা
ক্যাফেইন সেবন মানসিক চাপ বাড়াতে পারে। তাই এগুলো এড়িয়ে চলা উচিত। দুজনে
মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া উচিত। প্রতিদিন কিছু জিনিসের
জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলে মানসিক শান্তি বজায় থাকে।
পরিবেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে
পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখা আমাদের সবার দায়িত্ব। পরিবেশকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে
পারলে আমরা সুস্থ থাকতে পারবো এবং রোগবালায় থেকে দূরে থাকতে পারবো। পরিবেশ
পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য কিছু বিষয় মনে রাখতে পারিঃ
- ময়লা আবর্জনা নির্দিষ্ট স্থানে ফেলুন
- প্লাস্টিক এবং পলিথিন ব্যবহার পরিহার করুন
- গাছ লাগান এবং পরিবেশ সুরক্ষায় কাজ করুন
- পানি এবং বায়ু রোধ করুন
- পশুপাখিদের প্রতি যত্নশীল হন
- এলাকা পরিছন্ন রাখতে অন্যদের উৎসাহিত করুন
পরিবেশকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা মানে শুধু নিজের জন্য নয়, ভবিষ্যৎ
প্রজন্মের জন্য একটু সুন্দর পৃথিবী গড়া।
অবশ্যই পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য অপরিহার্য।
একটি স্বাস্থ্যকর পরিবেশ আমাদের শারীরিক ও মানসিক উ বৈদিক থেকে সুস্থ থাকতে
সাহায্য করে। পরিবেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার গুরুত্বঃ
- রোগ প্রতিরোধ
- শারীরিক স্বাস্থ্য
- মানসিক স্বাস্থ্য
- উৎপাদনশীলতা
- জীব বৈচিত্র্য রক্ষা
নিয়মিত চেকআপ করুন, যেমন যেগুলো রুটিন চেকআপ
সহজ উপায়ে কিভাবে আমরা স্বাস্থ্য সচেতন হতে পারি--স্বাস্থ্য পরীক্ষার মধ্যে
রুটিন চেকআপ অন্তর্ভুক্ত, যা শারীরিক অসুস্থতা বা রোগ প্রাথমিক পর্যায়ে সনাক্ত
করতে সাহায্য করে। এটি রোগ মারাত্মক হওয়ার আগে চিকিৎসার সুযোগ তৈরি করে। রুটিন
চেকআপের সাধারণত যা যা করা হয়ঃ
শারীরিক পরীক্ষা
- রক্ত পরীক্ষা
- মূত্র পরীক্ষা
- অন্যান্য পরীক্ষা
ডাক্তার আপনার উচ্চতা, ওজন, রক্তচাপ, হার্টবিট এবং শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা
করবেন। ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল এবং অন্যান্য সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা সনাক্ত করতে
রক্ত পরীক্ষা করা হয়। কিডনির কার্যকারিতা এবং অন্যান্য সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা
করতে সনাক্ত করতে রক্ত পরীক্ষা করা হয়। কিডনির কার্যকারিতা এবং অন্যান্য
স্বাস্থ্য সমস্যা জানতে মূত্র পরীক্ষা করতে হ... প্রয়োজনে ডাক্তারকে বুকের
এক্সরে , বা অন্যান্য পরীক্ষার পরামর্শ দিতে পারেন। ডাক্তার আপনার চিকিৎসায়
ইতিহাস এবং পারিবারিক রোগের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে চাইবেন।
আপনার বয়স, লিঙ্গ ,জীবনযাত্রার ধরন এবং পারিবারিক ইতিহাসের উপর ভিত্তি করে
ডাক্তার আপনাকে নিয়মিত চেকআপের জন্য একটি উপযুক্ত সময়সূচি নির্ধারণ করে
দেবেন। উদাহরণস্বরপ , আবার কিছু রোগের জন্য বছরে একবার বা দুবার
চেকআপ করার প্রয়োজন হতে পারে, আবার কিছু রোগের জন্য প্রতি কয়েক বছর পর পর চেকআপ
যথেষ্ট হতে পারে। নিয়মিত চেকআপের মাধ্যমে রুক সনাক্তকরণ এবং প্রতিরোধের জন্য
সুবিধা পাওয়া যায়। রোগের এক পর্যায়ে সনাক্তকরণ , চিকিৎসার সুযোগ বৃদ্ধি ,
রোগের জটিলতা কমে যাওয়া , সামগ্রিক স্বাস্থ্য এবং সুস্থতা নিশ্চিত
করা। আপনার স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে একটি
নিয়মিত চেকআপের সময়সূচি ঠিক করে নিন। স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্যের জন্য ভালো উৎস
থেকে যাচাই করুন।
ধূমপান ও তামাক থেকে বিরত থাকুন
ধূমপান ও তামাক সেবন স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এটি শরীরের বিভিন্ন
অঙ্গের মারাত্মক ক্ষতি করে এবং বিভিন্ন রূপ যেমন ক্যান্সার, হৃদরো্গ, স্ট্রোক
এবং শ্বাসকষ্টের মতো রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই ধূমপান ও তামাক সেবন থেকে বিরত
থাকুন। পান ও তামার ক্ষতিকর প্রভাবঃ
- ক্যান্সার-ধূমপান ফুসফুস, মু্খ, গলা , অগ্ন্যাশয়,কিডনি, এবং আরো অনেক ধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকি বা
- হৃদরোগ-ধূমপান হৃদরোগ, স্ট্রো্ক, এবং উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ায়।
- শ্বাসকষ্ট-ধূমপান ক্রনিক অবস্ট্রাক্টিভ পালমোনারি ডিজিজ সহ শ্বাসকষ্টের সমস্যা তৈরি করতে পারে।
- ডায়াবেটিস-ধূমপান ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স তৈরি করে এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়।
- অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা-ধূমপান রূপ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়, বন্ধ্যাত্বের কারণ হতে পারে এবং গর্ব অবস্থায় জটিলতা তৈরি করতে পারে।
ধূমপান থেকে বিরত থাকার উপায়ঃ
- ছাড়ার জন্য দৃঢ় সংকল্প করুন
- নিকোটিন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি ব্যবহার করতে পারেন
- পরামর্শ এবং সহায়তা দলের সাথে যোগাযোগ করুন
- ধূমপানের বিকল্প হিসেবে ব্যায়াম , যোগব্যায়াম বা অন্যান্য স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গ্রহণ করুন।
- ধূমপান মুক্ত স্থান বেছে নিন এবং ধূমপায়ীদের সঙ্গ ত্যাগ করুন।
- আপনার এবং আপনার পরিবারের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য ধূমপান ও তামাক সেবন থেকে বিরত থাকুন।
রুটিন অনুযায়ী টিকা এবং ভ্যাকসিন গ্রহণ করুন
সহজ উপায়ে কিভাবে আত্মসচেতন হতে পারি--অবশ্যই রুটিন অনুযায়ী টিকা এবং ভ্যাকসিন
গ্রহণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি রোগের বিরুদ্ধে শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে
এবং রোগের বিস্তার রোধ করে। আপনার এলাকার স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যোগাযোগ করে আপনার
এবং আপনার পরিবারের জন্য সঠিক টিকাদান কর্মসূচি সম্পর্কে জেনে নিন। আপনার
এলাকার স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যোগাযোগ করে, আপনি নিম্নলিখিত বিষয়গুলো জানতে
পারেনঃ
- কোন কোন রোগের জন্য টিকা পাওয়া যায়
- কোন বয়সের শিশুদের জন্য কোন টিকা প্রযোজ্য
- টিকা দেওয়ার সঠিক সময় এবং ডোজ
- টিকা দেওয়ার স্থান এবং পদ্ধতি
- টিকা দেওয়ার পর কি কি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে
আপনার সঠিক সময়ে এবং সঠিক পরিমাণে টিকা দেওয়া হলে, সে বিভিন্ন রোগ থেকে
সুরক্ষিত থাকবে। শিশুদের জন্য রুটিন টিকাদান কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত রোগ গুলো
হল-যক্ষা, পোলিও , ডিফথেরিয়া , হুপিং কাশি , ধনুষ্টংকার, হাম, রুবেলা,
হেপাটাইটিস বি , হিমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা-বি। এছাড়াও , গর্ব অবস্থায় এবং
প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য কিছু বিশেষ টিকা রয়েছে, যার রোগের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেয়।
আপনার এলাকার স্বাস্থ্যকর্মীর সাথে পরামর্শ করে, আপনার এবং আপনার পরিবারের
জন্য একটি উপযুক্ত টিকা দান পরিকল্পনা তৈরি করতে পারেন।
নিজের জন্য সময় বের করুন এবং নিজের পছন্দের কাজ করুন
সহজ উপায়ে কিভাবে আমরা স্বাস্থ্য সচেতন হতে পারি--ব্যস্ততার মাঝেও নিজের
জন্য সময় বের করবেন যেভাবে। ব্যস্ততার মাঝে নিজের আবেগ, শখ আত্মসমৃদ্ধির
জন্য সময় বের করা খুবই দুষ্কর। ব্যক্তি জীবনের অনেক আশা-আকাঙ্ক্ষা থাকে।
তবে সময়ের অভাবে অনেক কিছুই রয়ে যায়। তবে সত্য ব্যস্ত থাকার পরও নিজেকে নিজের
জন্য সময় বের করা খুবই জরুরী। বেশ জীবনের সময়ের খুব অভাব। সকাল থেকে রাত
পর্যন্ত নিয়মমাফিক শুটাছুটিতে কেটে যায়।
ব্যস্ততার মাঝেই নিজের আবেগ, শখ, আত্মসমৃদ্ধির জন্য সময় বের করা খুবই দুষ্কর।
ব্যক্তি জীবনের অনেক আশা-আকাঙ্ক্ষা থাকে। তবে সময়ের অভাবে অনেক কিছুই রয়ে যায়।
তবে শত ব্যস্ত থাকার পরও নিজের জন্য সময় বের করা খুবই জরুরী। নিজের পছন্দের দিকে
গুরুত্ব দেওয়া, পছন্দের কাজ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একঘেয়েমি দূর হয়।
ব্যস্ততার মাঝেও পছন্দের কাজের জন্য সময় বের করতে পারায় আত্মবিশ্বাসের প্রকাশ।
লেখকের শেষ কথা, মন্তব্য-সহজ উপায়ে কিভাবে আমরা স্বাস্থ্য সচেতন হতে পারি
সহজ কিভাবে আমরা স্বাস্থ্য সচেতন হতে পারি--স্বাস্থ্য সচেতন হওয়ার জন্য কিছু সহজ
উপায় হলো-সুষম খাদ্য গ্রহণ, পর্যাপ্ত ঘু্ম, নিয়মিত শরীর চর্চা , মানসিক চাপ
কমানো এবং স্বাস্থ্যকর জীবনধারা অবলম্বন করা। এছাড়াও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা ,
সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং রোগের সংক্রমণ প্রতিরোধ সচেতন থাকা জরুরি। আপনার চারপাশের
পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে রোগ প্রতিরোধ করার
সহজ হয়। এছাড়াও নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো এবং রোগের প্রাথমিক লক্ষণ দেখা
গেলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
সম্মানিত পাঠক, জীবন চলার পথে পাথেয় হিসেবে এই আর্টিকেলটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ আর
এই গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলটি আপনাকে ধৈর্য ধরে করার জন্য অসংখ্য অভিনন্দন। বিষয়
নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে তা প্রতিটি মানুষের ব্যক্তি জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে
আমি মনে করি। এই লেখাটির মধ্যে যদি কোন ভুল ত্রুটি থাকে তাহলে ক্ষমা সুন্দর
দৃষ্টিতে দেখবেন। আমি আশা করি কিছুটা হলেও আপনার/আপনাদের ভালো লেগেছে। আর ভালো
লেগে থাকলে আপনার কাছের মানুষদের সাথে দয়া করে শেয়ার করবেন। অতি ব্যস্ত জীবনের
মধ্যেও কিছুটা সময় বের করে মাঝে মাঝে এই ওয়েবসাইটে একটু কষ্ট করে ভিজিট করবেন।
আশা করছি, আপনি নিরাশ হবেন না। ধন্যবাদ আপনাকে/আপনাদেরকে।
মাসুদা আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url