পান্তা ভাতের উপকারিতা ও অপকারিতা

পান্তা ভাত আমাদের একটি জনপ্রিয় খাবার যা মূলত গ্রাম অঞ্চলে বেশী খাওয়া হয়ে থাকে ।
গ্রীস্মকালে বিশেষ করে পহেলা বৈশাখে এটি খাওয়ার প্রচলন আছে।পান্তা ভাত সাধারণত রাতের রান্না করা ভাতকে পানি দিয়ে ভিজিয়ে রেখে তৈরি করা হয় ।এই প্রক্রিয়ায় ভাতে ফারমেন্টেশন ঘটে,যা এর পুষ্টিগুণ বাড়িয়ে তোলে।চলুন জেনে নেই পান্তা ভাত খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতাঃ





প্রথমে আমরা উপকারিতা জেনে নি ঃ


আরো পড়ুনঃ বিড়ালের উপকারিতা ও অপকারিতা

এবার আমরা জেনে নিবো অপকারিতা গুলো ঃ



    উপকারিতার বিস্তারিত বিবরণ জেনে নেইঃ-

    হজম শক্তি বাড়ে:

    পান্তা ভাতে প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া থাকে, যা অন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নত করে।এটি কোষ্টকাঠিন্য কমাতে সাহায্য করে এবং হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে।ফারমেন্টেশন প্রক্রিয়া অন্ত্রে ভালো ব্যাকটিয়ার বৃদ্ধি ঘটায়,যা হজমশক্তি বাড়ায় ।

    শরীর ঠান্ডা লাগে:


    গরমে শরীরের তাপমাত্রা বাড়ে,যা অস্বস্তি সৃষ্টি করে ।পান্তা ভাত শরীরকে তাপমাত্রার ভারসাম্য ভারসাম্য
    বজায় রাখে এবং শরীরকে সতেজ রাখে ।


    ভিটামিন বি ও মিনারেল পাওয়া যায়:


    পান্তা ভাতে ফারমেন্টেশ্নের ফলে আয়রন ,ক্যালসিয়াম ,ভিটামিন বি ও মিনারেল,পটাসিয়াম,ম্যাগনেসিয়াম ও জিঙ্কের পরিমাণ বেড়ে যায় ।উদাহরণস্বরূপ, ১০০ গ্রাম সাধারণ ভাতে আয়রণের পরিমাণ ৩.৪ মিলিগ্রাম থাকলেও ,পান্তা ভাতে তা বেড়ে ৭৩.৯১ মিলিগ্রাম হয় ।এছাড়া, প্টাসিয়ামের পরিমাণ ৮৩৯ মিলিগ্রাম এবং ক্যালসিয়াম পরিমাণ ৮৫০ মিলিগ্রাম হয় ।এভাবে পান্তা ভাত শরীরের জন্য গ্রুরুত্বপূর্ণ খনিজ উপাদানের ভালো উৎস হয়ে উঠে।


    রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ও ত্বকের স্বাস্থ্য উন্নতি ঃ


    পান্তা ভাতে সোডিয়ামের পরিমাণ কম এবং পটসিয়ামের পরিমাণ বেশী থাকে ।এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে ।ফারমেন্টেশন প্রক্রিয়ায় রেজিস্ট্যান্স স্টার্চ তৈরি হয়,যা কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।পান্তা ভাতে কোলেজেন তৈরি হয়,যা ত্বকের জন্য ইলাস্টিসিটি বৃদ্ধি করে। নিয়মিত পান্তা ভাত খেলে ত্বক মসৃণ,টানটান ও উজ্জ্বল হয় ।এটি রূপচর্চার জন্যও উপকারী ।



    রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ

    পান্তা ভাতে থাকা প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা  বৃদ্ধি করে ।এটি শরীরকে বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে ।


    চলুন জেনে নেই পান্তা ভাতের অপকারিতাগুলোর বিবরণঃ

    ব্যাকটেরিয়ার ও ছত্রাকের কারণে জীবাণু সংক্রমণ হয় :


    পান্তা ভাত অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হয় বা দীর্ঘ সময় বাইরে রাখা হয়,তাহলে এতে ক্ষতিকর ব্যাকরিয়া বৃদ্ধি পেতে পারে ।এটি ফুড পয়জনিংয়ের কারণ হতে পারে ।

    গ্যাষ্টিকের সমস্যা হতে পারে :

    পান্তা ভাতে ল্যাকটিন এসিডের পরিমাণ বাড়ে,যা কিছু মানুষের জন্য এসিডিটির সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

    দাঁতের ক্ষয়-

    পান্তা ভাতে থাকা এসিড দাঁতের এনামেল ক্ষয় করতে পারে ।দীর্ঘ  সময় ধরে পান্তা ভাত খেলে দাঁতের ক্ষতি হতে পারে ।

    এলকোহলের উপস্থিতি-

    ফারমেন্টেশ্ন প্রক্রিয়ায় কিছু পরিমাণ এলকোহল তৈরি হতে পারে ।যদি পান্তা ভাত দীর্ঘ সময় ধরে ফারমেন্ট হয় ,তাহলে এতে এলকোহলের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে ,যা মানুষের জন্য অস্বস্তিকর হতে পারে ।



    সর্বোপরি কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা যেগুলো আমাদের বিশেষ ভাবে খেয়াল করতে হবে ঃ

    পান্তা ভাত একটি স্বাস্থ্যকর ওপুষ্টিকর খাবার ,বিশেষ করে গ্রীস্মকালে এটি শরীরকে ঠান্ডা রাখে এবং শক্তি সরবরাহ করে ।তবে,এটি খাওয়ার সময়  কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।স্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি করা  পান্তা খাওয়া উচিত এবং দীর্ঘ সময় ধরে ফারমেন্টেশন এড়ানো উচিত ।যদি এসব বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করা হয় ,তাহলে পান্তা ভাত স্বাস্থ্যকর খাবার হিসেবে উপকারী হতে পারে।





























    এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

    পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
    এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
    মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

    অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

    comment url